রমযানের একটা গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতিকাফ অর্থাৎ ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করা, দুনিয়াবি সব কাজকর্ম, ব্যস্ততা থেকে বিযুক্ত হয়ে আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে সময় কাটানো। কুরআনে আল্লাহ ইতিকাফকে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও নামাযের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আামল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَعَهِدْنَا إِلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। -সুরা বাকারা, আয়াত: ১২৫
রমযানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাহ। আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজীবন রমাদান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। -বুখারী, মুসলিম
আসুন আমরা ইতিকাফ করার পদ্ধতি ও বিধিনিষেধগুলো সম্পর্কে জানি :
10
Tasks
১. রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগেই ইতিকাফের প্রস্তুতি নিয়ে অর্থাৎ শেষ দশটি দিন মসজিদে কাটানোর প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে চলে যান।
Once
২. একান্ত প্রয়োজন না হলে মসজিদ থেকে বের হবেন না। আপনার খাবার যেন মসজিদে পৌঁছে দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা করুন।
Once
৩. ইতিকাফে যথা সম্ভব পুরো সময়টিই আল্লাহর স্মরণ ও ইবাদতে মগ্ন থাকার চেষ্টা করুন। তবে ইতিকাফরত ফরজ ইবাদতের বাইরে কোনো নফল ইবাদত না করলেও ইতিকাফের সওয়াব পাবেন।
Daily 1x
৪. রমযানের শেষ দশ দিন ইতিকাফে বসার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো কদরের রাতে ইবাদতের সৌভাগ্য ও তওফিক লাভ করা। তাই রাত জেগে ইবাদত করার চেষ্টা করুন। বিশেষত বেজোড় রাতগুলো জিকির ও নামাযে মগ্ন থাকার চেষ্টা করুন।
Daily 1x
৫. ইতেকাফরত অবস্থায় এমন সব কথা বলা ও কাজ করা বৈধ, যাতে কোনো গুনাহ নেই। প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথাবার্তা বলতেও নিষেধ নেই। তবে বেহুদা ও অনর্থক কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকুন।
Daily 1x
৬. ইতিকাফরত অবস্থায় মসজিদে বা ইতিকাফের স্থানে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবেন, দাড়িতে ও চুলে তেল লাগাতে পারবেন এবং চিরুনিও ব্যবহার করতে পারবেন।
Once
৭. পর্দার ব্যবস্থা ও সুযোগ থাকলে নারীরা মসজিদে ইতিকাফে বসুন। অথবা নিজের বাসার একটি কক্ষকে ইতিকাফের জন্য নির্ধারণ করুন এবং ইতিকাফের নিয়তে ওই কক্ষে নিজেকে আবদ্ধ করুন।
Once
৮. ইতেকাফরত অবস্থায় মসজিদে বা ইতেকাফের কক্ষের ভেতরে স্বামী স্ত্রী পরস্পরের সাথে দেখা করতে পারবেন এবং স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ; এর দ্বারা ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
Once
৯. ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমাদান পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করুন। তাহলে আপনি সুন্নাহ ইতিকাফ পালনের সওয়াব পাবেন।
Once
১০. দশ দিনের কম যেকোনো পরিমাণ সময় ইতিকাফ করলে তা নফল ইতিকাফ হিসেবে গণ্য হবে। নফল ইতিকাফও অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ ও সওয়াবের কাজ। তাই সুন্নাহ ইতিকাফ পালন করতে না পারলে যে কয় দিন সম্ভব নফল ইতিকাফে বসুন।